এইচটি বাংলা ডেস্ক: আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করবে ট্রেন ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’। এই ট্রেন ঢাকা থেকে ছেড়ে এসে চট্টগ্রামে পৌঁছাবে ভোর ৪টায়। এরপর চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে ছুটবে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেনের এই সময়সূচিতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে।
ট্রেনে পর্যাপ্ত গভর্নমেন্ট রেল পুলিশের (জিআরপি) ব্যবস্থা নেই। এমনকি লোকবলের চাহিদা দেওয়ার পরও এখনও কোনো বরাদ্দ পায়নি বলে জানান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জিআরপি থানায় কথা বলে জানা গেছে, রেল পুলিশের ওসিসহ কর্মরত আছেন ৫২ জন। এর মধ্যে কনস্টেবল ৩৮ জন, এএসআই ৬ জন, এসআই ৭ জন। এসব জনবল শুধুমাত্র চট্টগ্রাম থেকে চলাচল করা ট্রেনের জন্য। কিন্তু কক্সবাজারের ট্রেনের জন্য আলাদা করে এখনও কোনো লোকবল বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
আগে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীও (আরএনবি) রেল পুলিশের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতো। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দায়িত্ব বন্ধ রাখা হয়।
তবে নতুন করে ১২ জন রেল পুলিশ সদস্য বাড়ানোর কথা রয়েছে বলে জানান রেলওয়ের (পূর্ব) বিভাগীয় কর্মব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো পুলিশ সদস্য পাননি বলে জানান চট্টগ্রাম জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম রেল পুলিশ সুপার মো. হাসান চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আপাতত যে লোকবল আছে তা দিয়েই যাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’
চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনের সময়সূচি
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেন ঢাকা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ছাড়বে ৭৮০ জন যাত্রী নিয়ে। রাত ৩টা ৪০ মিনিটে ট্রেনটি চট্টগ্রামে পৌঁছে ইঞ্জিন ঘুরিয়ে রাত ৪টায় চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে কক্সবাজার উদ্দেশ্য ছেড়ে যাবে। এরপর কক্সবাজার পৌঁছবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে।
ট্রেনটি কক্সবাজার থেকে ছাড়বে দুপুর ১টায়। এরপর চট্টগ্রাম পৌঁছাবে বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা উদ্দেশ্য বিকাল ৪টায় ছেড়ে রাত ৯টা ১০ মিনিটে কমলাপুর রেল স্টেশনে পৌঁছাবে।
এদিকে ট্রেনের সময় ভোর ৪টায় হওয়ায় চট্টগ্রামের যাত্রীরা বিড়ম্বনায় পড়বে কিনা— এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের রেল স্টেশন মাস্টার জাফর আলম বলেন, ‘যারা যাবেন তারা আগেভাগেই স্টেশনে চলে আসবেন।’
ননস্টপ ট্রেনে সর্বনিম্ন ভাড়া ৬৯৫ টাকা
‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেনটিতে শোভন চেয়ারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৯৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া এক হাজার ৩২৫ টাকা, স্নিগ্ধা (এসি সিট) শ্রেণিতে এক হাজার ৫৯০ টাকা এবং এসি বার্থের (ঘুমিয়ে যাওয়ার আসন) ভাড়া দুই হাজার ৩৮০ টাকা।
সে হিসেবে সাধারণ আন্তঃনগর ট্রেনের চেয়ে শোভন চেয়ারে ১৯৫ টাকা, স্নিগ্ধা (এসি সিট) শ্রেণিতে ৪৪০ টাকা এবং এসি বার্থে ৬৫৫ টাকা বেশি গুণতে হবে যাত্রীদের।
অন্যদিকে যেসব যাত্রী চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যাবেন, তাদের শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ৪৬৬ এবং এসি বার্থের ভাড়া ৬৯৬ টাকা।
কক্সবাজার এক্সপ্রেসে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন ছাড়বে রাত সাড়ে ১০টায়। চট্টগ্রামে এসে পৌঁছাবে রাত ৩টা ৪০ মিনিটে। ২০ মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে ভোর ৪টায় কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। কক্সবাজারে পৌঁছাবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ রাজধানী থেকে পর্যটন শহরে যেতে সময় লাগবে আট ঘণ্টা ১০ মিনিট।
আর কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেন ছাড়বে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। এ ট্রেন চট্টগ্রামে আসবে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে রাত ৯টা ১০ মিনিটে।
ঢাকা-কক্সবাজার রুটে কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে ট্রেন চলবে। ট্রেনটির নাম্বার ৮১৩/৮১৪। সিট সংখ্যা ৭৮০। ১৬/৩২ লোডের কক্সবাজার এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে সোমবার ও কক্সবাজার থেকে মঙ্গলবার বন্ধ থাকবে।