ছাতক প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতক দোয়ারাবাজার উপজেলার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল নিয়ে সিলেটের ব্যবসায়ী ও মিলার সফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, সরকারের একটি জনবান্ধব কর্মসূচির নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, যেখানে প্রত্যেক কার্ডধারী ভোক্তাকে ৩০ কেজি চাল ৪৫০ টাকায় দেয়া হয়। এই চালে পুষ্টি মিশ্রণ করে দেয়ার জন্য সরকারের ও খাদ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে একবার সরকারি চাল আত্মসাৎ কালোবাজারি করার দায়ে সে দীর্ঘদিন জেল খেটে বের হয়। আলোচিত সফিক খুবই চতুরতার সাথে ছাতকে একটি মিল ভাড়া নিয়ে ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার টেন্ডার বাগিয়ে নেন। প্রতি মাসে ওজনের চাল কমিয়ে ও টিকমতো পুষ্টি না মিশিয়ে সরকারের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকার বিল নিচ্ছেন।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল এবং ভিজিডি কর্মসূচির জুলাই -আগস্ট মাসের চাল সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে বিলি-বিতরণের কথা থাকলেও কোনো মাসেই সময়মতো চাল বিতরণ না করে সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে ভালো চাল নিয়ে তার শেখঘাটের মিল ও দোকান থেকে পঁচা চাল সরবরাহ করেন। সেপ্টেম্বর মাসের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল এখনো ডিলারদের কাছে সম্পূর্ণ বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। ভিজিডি কর্মসূচির জুলাই ও আগস্ট মাসের চাল আজ পর্যন্ত কোনো ইউনিয়নে পৌছায়নি৷ এতে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
দুলারবাজার ইউনিয়নের ডিলার জামাল হোসেন, ইসলামপুর ইউনিয়নের ডিলার এমরান আহমদ, জাউয়ার ইউনিয়নের ডিলার সৈয়দুর রহমানসহ বিভিন্ন ডিলাররের সাথে আলাপকালে তারা অভিযোগ করেন, সময়মতো ডিলাররা পুষ্টি চাল পাচ্ছেন না। এক মাসের চাল অন্য মাসে দেয়া হচ্ছে। ভিজিডিও ইউনিয়ন পর্যায়ে যাচ্ছে না। মিলার সফিক খাদ্য বিভাগের বড় বড় অফিসারকে ম্যানেজ করে এরকম অরাজকতা করছেন। তার বিরুদ্ধে কথা বললে ডিলারশিপ থাকবে না৷
সচেতন মহলসহ নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক ডিলারের প্রশ্ন- ছাতক-দোয়ারাবাজারে কি ভালো কোনো ব্যবসায়ী নেই? নাকি খাদ্য বিভাগ শফিকের কাছে জিম্মি? এছাড়া মিলার সফিক বিগত সময়ে জকিগঞ্জে চাল জালিয়াতিতে ধরা পড়ে বেশ কিছুদিন জেল খেটে বের হন৷ তার এই খাদ্য জালিয়াতির বিষয়ে মামলা চলমান রযেছে।
যার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই ব্যবসায়ী মেঘনা অটোরাইস মিলের মালিক সফিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং মিটিংয়ে রয়েছেন বলে ফোন কেটে দেন৷
এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা পিনাক পানি ভট্টাচার্য জানান কিছুটা দেরি হচ্ছে কারন সিদ্ধান্ত আসতে দেরি হওয়ায় একমাসের বরাদ্দ আরেক মাসে যায়।আমাদের ও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। ডিলার গন ও সময় মত মাল উঠায়না আর্থিক সমস্যা দেখিয়ে।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক ময়নুল ইসলাম ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে ব্যবস্থা নেব।
সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা অনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ড মেনে নেব না, সেই যে-ই হোক। খাদ্যবান্ধব ও ভিজিডি কর্মসূচি নিয়ে আমরা তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব