হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা ইউনিয়নের গ্যাসফিল্ড বিশ্বরোড থেকে বরতল (ভাটি সুন্দরপুর) সড়কের ভোগান্তি ছিল দীর্ঘদিনের।
ভাঙা সড়ক আর হাঁটু সমান কাঁদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হতো প্রায় ৪টি গ্রামের হাজারো মানুষকে। দীর্ঘ যুগ চলা এ ভোগান্তির অবসান হয়েছে।
এলাকার রাস্তাটি পুনঃ সংস্কার করায় স্বস্তি এসেছে সড়কে চলাচলকারীদের মাঝে। গ্যাসফিল্ড বিশ্বরোড থেকে বরতল ভাটি সুন্দরপুর বাজার রাস্তার মধ্যে কিছুটা অংশ বাকি আছে সেটিও করা হবে বলে ও জানা গেছে।
এদিকে বাজার, হাসপাতাল, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া সহ রামচন্দ্রপুর, বরতল (ভাটি সুন্দরপুর), রতনপুর, সুন্দরপুর গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই রাস্তাটি। চলাচলের জন্য একটি রাস্তা এই গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের কামনা।
সেই কামনা সত্যি হচ্ছে এবার। ঐ গ্রামের মানুষের চলাচলের জন্য দীর্ঘ যুগ পর পুনঃ সংস্কার করা হয়েছে এই রাস্তা।
বাঘাসুরা ইউনিয়নের বরতল (ভাটি সুন্দরপুর) গ্রামের এক শিক্ষার্থী বলেন, মানিকপুর গ্রামে একটি হাই স্কুল আছে ডাঃ মহিউদ্দিন হাই স্কুল নামে সেই স্কুলে পড়াকালীন সময়ে স্কুলে যাবার পথে দুই সেট ড্রেস নিতে হতো। এক সেট ড্রেস কাদা ও পানিতে নষ্ট হয়ে যেত। পরে পাকা রাস্তায় গিয়ে কাঁদামাখা ড্রেসটি পরিবর্তন করে সাথে নিয়ে যাওয়া অন্য সেট পরে স্কুলে যেতাম। আবার স্কুল শেষে কাঁদা মাখাঁনো স্কুলড্রেস পরে বাড়ি আসতাম। রাস্তাটা হয়ে গেছে এখন বাচ্ছাদের দুই সেট ড্রেস নিয়ে স্কুলে যেতে হবে না। আর কাঁদা মাখাঁনো ড্রেস পরে বাড়ি আসতে হবে না।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, একটি রাস্তা পুনঃ সংস্করন করা আমাদের বহুদিনের কামনা। অবশেষে আমাদের সেই কামনা পূরন হয়েছে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে চিকিৎসা নিতে দেরি হতো, ছেলে মেয়েদের স্কুলে যেতে ব্যাপক সমস্যা হতো। সেই সমস্যা কাটানোর জন্য আমাদের স্বপ্নের সড়কটির সংস্করণ কাজ শেষ হয়েছে।
দীর্ঘ যুগের ভোগান্তির পর রাস্তাটি পুনঃসংস্করণ হওয়াতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি এবং হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসন থেকে টানা দ্বিতীয় বারের মতো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী (এমপি)'র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসীরা।
এদিকে দীর্ঘ যুগ পর পাওয়া রাস্তা রক্ষার্থে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ ও বেরিকেট গেইট দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।
তাঁরা প্রতিবেদককে জানান, এলাকার এই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু ভর্তি ট্রাক্টর, ড্রাম ট্রাক ইত্যাদি যাতায়াত করে। যদি এভাবে যাতায়াত করে তাহলে ট্রাক্টরের বড় বড় চাকার কারণে উঠে যাবে রাস্তার কার্পেটিং, সৃষ্টি হবে ছোট বড় গর্ত। ফলে নির্মিত সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে ও জানান।
সচেতন মহলের অভিমত, বিশেষ করে গ্রামীণ সড়কের বড় শত্রু ট্রাক্টর সেটা ভুক্তভোগীরা বুঝলে ও অন্য অনেকেই বুঝে না। আবার দায়িত্বশীল কেউ কেউ বুঝলে ও না বোঝার ভান করে। এতে ক্ষতি হবার তা হতেই থাকে, আর এদিকে ভোক্তভোগীদের ভোগান্তি বাড়তেই থাকে। ট্রাক একসময় যন্ত্রদানবের কুখ্যাতি পেলেও এখন সে কুখ্যাতি পেয়েছে ট্রাক্টর। কারন ট্রাক্টর শুধু সড়কের ক্ষতি করে না, এর ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন চালকের বেপরোয়া চলাচলে প্রানহানী ও ঘটে।