এইচটি বাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও তার মুক্তির দাবিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় বিক্ষোভ হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভে আমদানি-রফতানিসহ বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও ভিসা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। অপরদিকে, একই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, পররাষ্ট্র ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেই থাকবে তৃণমূল।
এসময় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের জীবন, জীবিকা, বাসস্থান, উপাসনা কেন্দ্র সুরক্ষার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি দল। বিজেপি দলীয় কর্মীদের সঙ্গে হাতে পোস্টার-ব্যানার নিয়ে কলকাতার রবীন্দ্র সদন থেকে মিছিল করে সেখানে পৌঁছান তিনি।
স্মারকলিপি জমাদান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক আপনারা নষ্ট করছেন। বিজয় দিবস আসছে আগামী ১৬ই ডিসেম্বর, তার প্রাক্কালে সেই সময় ভারতীয়দের ও সেনাবাহিনীর অবদান আপনারা চাইলেও মুছে ফেলতে পারবে না। আমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে বাংলাদেশের বহু মানুষের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। এর আগে আমরা বাংলাদেশে অনেক সরকার দেখেছি। কিন্তু এরকম ভারতবিদ্বেষী মনোভাব আমরা বিগত দিনে দেখিনি। এসময়, বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু বলেন, চিকিৎসা নেয়ার জন্য করাচি আর লাহোর যান, এখানে আসবেন না।
এদিকে বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে মুখ খুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃনমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও লোকসভার এমপি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, এটা পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপার। এটা নিয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করব না। তবে তৃণমূলের অবস্থান এ বিষয়ে খুব স্পষ্ট। বিদেশে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে ভারত সরকার যে অবস্থান নেবে, তৃণমূল তাকে সমর্থন করবে। বাংলাদেশে যা হয়েছে, তা দুর্ভাগ্যজনক।
একই ইস্যু নিয়ে কথা বলেছেন মমতা মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বলেন, যে ঘটনা ঘটছে তা অনভিপ্রেত। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও সংঘর্ষে মানব সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে। বর্তমান সরকারের উচিৎ অবিলম্বে যত দ্রুত সম্ভব সেদেশের সংখ্যালঘু মানুষের জীবন-জীবিকা, বাসস্থান সুরক্ষিত রাখার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। তাহলে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আন্তর্জাতিক মৈত্রী সম্পর্ক অক্ষুন্ন থাকবে।
এদিন নিরাপত্তার কারণে পুলিশ বাহিনী ঘিরে রাখে উপ-হাইকমিশনের অফিস চত্বর। অফিস থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে আসা বিক্ষোভ মিছিল আটকে দেয় কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। বাঁধা পেয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন তারা। পরে পুলিশ উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনে।
উৎস: যমুনা টেলিভিশন।