শিরোনাম
বিজিএমইএ’র নির্বাচনে জয়লাভ করেছে ‘ফোরাম’ জোট।  ছাতকে সাংবাদিক সাকির আমিনের উপর সন্ত্রসী হামলা আহত ৫ জন বিজিএমইএর নির্বাচনে অধিকাংশতে জয়ী ফোরাম জোট । ঈদের পর ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ: জানালেন মনোহরদী পৌর আমীর ২ জুন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন । সুন্দর, শান্তিপূর্ণভাবে ও শৃঙ্খলার মধ্যে বিজিএমইএর নির্বাচনে ভোট শেষ হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের পক্ষে সুস্পষ্ট অবস্থানে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৫ উপলক্ষে মনোহরদীতে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক সহায়তা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে – সরদার বকুল
রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন

 

আজ বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ’র শুভ জন্মদিন ।

রিপোটারের নাম / ১৫১ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫

 

রেজাউল মোস্তফা , চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : পটিয়া উপজেলা ধলঘাট ইউনিয়নের তেকোটা গ্রামে ১৯৫৫ সালের ১৯ মে সোমবার এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ৫ ভাই ৪ বোনের মধ্যে তৃতীয় তাহার পিতার নাম মনোহর আলী, মাতার নাম ছবুরা খাতুন।

বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ স্থানীয় গৈড়লা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং গৈড়লা কে.পি. উচ্চ বিদ্যালয় হতে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৭২ সালে পটিয়া কলেজ উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন ’৭৪ সালে এইচ.এস.সি. পাশ করেন। এইচ.এস.সি. পাশের পর পটিয়া কলেজেই ডিগ্রীতে ভর্তি হন। ১৯৭৭ সালে ডিগ্রী পাশ করেন। ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এ (রাষ্ট্র বিজ্ঞানে) ভর্তি হন ১৯৮০ সালে এম.এ পাশ করেন। এম.এ পাশ করেই তিনি চট্টগ্রাম আইন কলেজে ভর্তি হন এবং আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। আইন কলেজে পড়াশোনা শেষ করেই অন্য কোন পেশায় না গিয়ে তিনি চাকুরী করার সিদ্ধান্ত নেন।

পড়াশোনা শেষ করে তিনি প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষে চাকুরী গ্রহণ করেন সেখানে দুই বছর চাকুরী করার পর চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে চাকুরী গ্রহণ করেন সেখানে ১৯৮৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাকুরী করার পর কাস্টমসের চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ১৯৮৩ সালেই বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে যুগ্ম-পরিচালক পদ হতে অবসর গ্রহণ করেন।

 

বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ ৪ (চার) কন্যা সন্তানের জনক।

১ম সন্তান : প্রকৌশলী সাবরিনা বিনতে আহমদ সাকী একজন আই.টি বিশেষজ্ঞ। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে চাকুরীতে আছে। তিনি ঢাকা বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় ও ভার্জিনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা করেন।

২য় সন্তান : ডাক্তার সায়মুনা জেসমিন পিংকি, এম.বিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), চট্টগ্রাম পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ কর্মরত আছেন।

৩য় সন্তান : প্রকৌশলী ইফফাত বিনতে ফজল (ইমু) আমেরিকান মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ার এম.এস করে ১ম শ্রেণিতে ১ম হয়েছে এবং বর্তমানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন।

৪র্থ সন্তান : ফারিয়া জেসমিন প্রিমা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজম্যান্টে অনার্স করছেন।

বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষনার পর গৈড়লা কে.পি. উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানীয় যুবকদের নিয়ে নিয়মিত ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেন। ইহাতে তেকোটো, গৈড়লা, করনখাইন, মুকুটনাইট, নাইখাইন, উইনাইনপুরা, লড়িহরা, পাইরোল গ্রামের শতশত যুবক অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে ১৬ এপ্রিল, শুক্রবার সকাল ১১টায় পটিয়া থানা এলাকায় পাক বাহিনী ব্যাপক বিমান হামলা করলে ঐ দিন থেকে স্থানীয় প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দেন এবং নেতৃবৃন্দের পরবর্তী আদেশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন, ইহার দুই একদিন পর কমরেড পূর্নেন্দু কানুনগোয় তেকোটা বৌদ্ধ মন্দিরে বৈঠক করে জানালেন যে, পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ইতি মধ্যে ভারত চলে গেছেন। তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য কর্মীদের ভারতে প্রেরণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাজেই ফজল আহমদ ও সুজিত বড়ুয়াকে ভারতে প্রেরণের কথা জানান। তাহার পরামর্শ মোতাবেক ১ মে ১৯৭১ ভারতের উদ্দেশ্যে এলাকা ত্যাগ করেন। নেতার নির্দ্দেশ মোতাবেক মিরেশ্বরাই আবুর হাট হয়ে চৌদ্দ গ্রাম হয়ে ১০/১২ জন বেলোনিয়া (ত্রিপুরা)’য় প্রবেশ করেন। সেখানে থেকে আগরতলা, ক্রেপ্ট হোস্টেলে যায়, সেখানে নেতৃবৃন্দ ছিলেন। সেখান থেকে বরদোয়ালী স্কুলে ১০/১২ দিন অপেক্ষার পর দেশ থেকে আসা স্কুল নেতা-কর্মীর ইন্টারভিউ হয়। ইন্টারভিউ শেষে বি.এম হোস্টেলে প্রেরণ করেন। সেখানে দুই দিন অপেক্ষার পর হোস্টেলের নিচে নামানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা চৌধুরী হারুণ রশিদ, তিনি জাতীয় পতাকা হাতে শপথ বাক্য পাঠ করালেন। ইহার পর ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্রাকে তুলে আগরতলা বিমান বন্দরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষমান ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের কার্গো বিমান। উক্ত বিমানে করে আসাম তেঁজপুর সেনা বিমান ঘাটিতে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে ভারতীয় বাহিনীর ট্রাকে করে সেনানিবাসে এলাকায় নিয়ে আসা হয়। সেখানেই বিশেষ গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ হয়। চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলীয় গেরিলা বাহিনীর লিডার ছিলেন কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে প্রবেশ করেন ১৯ জন। পরে আরো যুক্ত হন ৩ জন। ভারতে যুবকদের প্রেরণ না করে স্থানীয় ভাবে ট্রেনিং সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক বোয়ালখালী করলডেঙ্গা পাহাড়ে চালতাছড়িতে প্রশিক্ষণ শিবির স্থাপন করেন। সেখানে শতশত যুবককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখানে ২ মাস ১০ দিন বিশেষ গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ ’র গেরিলা দলের লিডার ছিলেন কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম ডেপুটি লিডার উদয়ন নাগ। ফজল আহমদ ’র দল ছিল ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনী।বাংলাদেশে সাবরুম রামগড় হয়ে ফটিকছড়ি হয়ে বোয়ালখালী প্রবেশ করেন।

১ম যুদ্ধ : সরাসরি যুদ্ধ হয় কেলিশহর গোপাপাড়া, ২য় যুদ্ধ ধলঘাট রেল স্টেশন দখলের যুদ্ধ, বোয়ালখালী কালাইয়ার হাট রাজাকার ক্যাম্প দখলের যুদ্ধ ৩য় যুদ্ধ : চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে ১৮ নভেম্বর ইন্দ্রপোল দখল ও সেতু ধ্বংস করে দেয়া ৪র্থ সম্মুখ যুদ্ধ : ৯ ডিসেম্বর গৈড়লার টেকে ঐতিহাসিক সম্মুখ যুদ্ধ সেই যুদ্ধে পাক বাহিনীর ১৪ জন নিহত হয় এবং শতাধিক আত্মসমার্পন করেন বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসস্ত্র দখলে আসে। ১৩ ডিসেম্বর পটিয়া থানায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন। মূলত : ৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা হানাদার মুক্ত হয়।

বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা ফজল আহমদ শুভ জন্মদিনে এইচটি বাংলা পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।

 

 


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ