ছাতক প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় দুই গ্রামের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ইছামতী বাজার এলাকায় বনগাঁও ও লুভিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লুভিয়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলাম (যিনি স্থানীয়ভাবে চোরাকারবারী হিসেবে পরিচিত ও ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক) ও বনগাঁও গ্রামের জগম্বর আলীর ছেলে ফজলুল করিমের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফজলুল করিম তার পাওনা ৫ লাখ টাকা দাবি করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই বনগাঁও ও লুভিয়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
দফায় দফায় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে বনগাঁও গ্রামের মানিক মিয়া এবং লুভিয়া গ্রামের দিলোয়ার হোসেন ও মুক্তার হোসেনকে গুরুতর অবস্থায় সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তিতে তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে এয়ার এম্বুল্যান্সে করে উন্নত চিকিসৎসার জন্য ঢাকা নেয়া হয়েছে। অন্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সংঘর্ষের সময় ইছামতী বাজারের একাধিক দোকান ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে একটি পক্ষ সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ডিজেল ঢেলে ব্রীজের ওপর আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৬ জনকে আটক করে।
এ ঘটনায় আহত মানিক মিয়ার স্ত্রী শাহিনুর বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার সকালে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫–২০ জনকে আসামি করে ছাতক থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আটক ৬ জনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে একই দিন দুপুরে আদালতে সোপর্দ করেছে।
ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।##