ডেস্ক রিপোর্টঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে সরকারী গোপাট রকম ভূমি দখলের নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক অপপ্রচার করার প্রতিবাদে ছাতক প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা সদর ইউনিয়নের মানসীনগর গ্রামের মৃত রাশিদ আলীর ছেলে রইছ উদ্দিন। আলাউদ্দিন ও কফিল উদ্দিনসহ পরিবারের পক্ষে গতকাল শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, প্রায় মাসখানেক আগে মানসীনগর গ্রামের মৃত আবদুল বারির ছেলে কামাল উদ্দিন আমিসহ আমার ভাই আলাউদ্দিন ও কফিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছাতক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রনোদীত। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও সার্ভেয়ার ঘটনাস্থল সরজমিন তদন্ত করলে তাদের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তদন্তে বরং আমরা সঠিক জায়গায় যে আছি এবং সড়কও তার সঠিক স্থানে রয়েছে তা প্রমাণিত হয়।
মানসীনগর মৌজার জেএল নং-২১১ স্থিত এসএ দাগ নং-৮১৩, সরকারী খতিয়ান ভূক্ত গোপাট রকম ভূমি এবং ৮০৬ নং দাগে কালবার্ট অবস্থিত। ওইদিন তাদের ইচ্ছেমত কাজ না করায় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) ছাতক এর সরকারী গাড়ি আটকে রাখার মতো তারা জঘণ্য অন্যায় করেছিল। সরকারী খতিয়ান ভূক্ত এ গোপাট রকম ভূমিতে আনুমানিক ২৬-২৭ বছর আগে মানুষের যাতায়াত এবং গরু চলাচলের গোপাট হিসেবে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু সরকারের বরাদ্দের মাধ্যমে আনুমানিক ২০ বছর আগে এখানে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়, যা ওই রাস্তাটি ব্যবহার করে আসছে কামাল গংরা।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ২০০২ সালে মানসীনগর গ্রামের মৃত গোলাম হাফিজ এর ছেলে ফয়জুল হক ও আজমান আলীর ছেলে ফজল উদ্দিন এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল ২০০২ সালে মানসীনগর গ্রামে হাফিজ মফিজুর রহমান সাহেবের সভাপতিত্বে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান সাহাজুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, জুবেদ আলী, সাবেক ইউপি সদস্য রইছ আলীসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। উভয় পক্ষের বক্তব্য শ্রবন করে উপস্থিত মুরব্বিগণ পক্ষদ্বয়কে তাদের দাবীর স্বপক্ষে কাগজপত্রাদি দাখিল করতে বলা হলে ফয়জুল হক গং তাদের দাবীকৃত দেড় শতক ভূমির পক্ষে কাগজপত্র বা দলিল প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়। এ বিরোধ আপোষ নিস্পত্তি করে দেওয়ার জন্য সালিশ বৈঠক থেকে ইউপি সদস্য সমরোজ আলীসহ পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন করা হয়। সালিশ বোর্ডের সদস্যগণ পক্ষদ্বয়ের বিরোধ মিমাংসার জন্য বিরোধিও ভূমি সরজমিন তদন্ত করেন। এই সময় সালিশ বোর্ডের কাছে ফজল উদ্দিন তার চলাচলের অসুবিধার কথা জানিয়ে চলাচলের ব্যবস্থার জন্য ওই বোর্ডকে অনুরোধ করে। অবস্থা বিবেচনায় রইছ উদ্দিনের পুরাতন বাড়ির দক্ষিণ পাশে রাস্তা দিয়ে ফজল উদ্দিনকে চলাচলের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়। প্রয়োজনে ফজল উদ্দিনের বাড়ি দিয়ে অপর পক্ষ চলাচল করিবেন মর্মে সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি উল্লেখ করেন, মানসীনগর মৌজার বিরোধীয় ভূমির ৮১৩ নং দাগের লগ্ন এসএ ৮০৬ নং দাগে .১৬২৫ একর, এসএ ৮১৪ নং দাগে .২৯ একর, এসএ ৮১৫ নং দাগে .১৩একর, এসএ ৮১৬ নং দাগে .১১একর, এসএ ৮৮০নং দাগে .০৫একর, এসএ ৮৮১ নং দাগে .০৮একর, এসএ ৮৮২ নং দাগে .০৭একর, এসএ ৮৮৩ নং দাগে .১৭একরসহ পৃথক দলিল মূলে ও মৌরশী স্বত্ত মোট ১.০৬২৫ একর ভূমির মালিক ও দখলদার আমরা হই। পরবর্তীতে আবারও আমাদের বিরুদ্ধে রাস্তা দখলের অভিযোগ এনে সুনামগঞ্জ আদালতে বিবিধ মোকদ্দমা নং-৬৬/২০০২ দায়ের করা হয়। গত ২০ ডিসেম্বর ২০০৪ সালে মামলার প্রেক্ষিতে তৎকালিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদরুল হককে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন। অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত না হওয়ায় আদালত মামলাটি নথিজাত করেন। সংবাদ সম্মেলনে রইছ উদ্দিনের ভাই আলা উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, ছমির উদ্দিন, ভাতিজা লায়েক মিয়া প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।