শিরোনাম
বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া  বিলিয়ন ডলার উদ্ধারে কানাডার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা লালমনিরহাটে মৃত গরুর মাংস বিক্রি -ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান সঠিক কাঠামো অনুসরণ করা গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অত্যন্ত জরুরি : চুয়েট ভিসি যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বিপিএলে ফিক্সিং নিয়ে তদন্তের কাজ করছে বিসিবি । চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের গঙ্গাস্নান অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকে সকল কর্মকর্তাদের সব লকার ফ্রিজ করা হয়েছে।  গ্র্যান্ড ইভেন্ট ‘জিপিএইচ মহারাজ দরবার’ অনুষ্ঠিত নিকোর জন্য ম্যানসিটিকে গুনতে হচ্ছে ৬০ মিলিয়ন ইউরো। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে জনগনের টাকা চুরি করবে না : জামায়াতের আমির
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:০৪ অপরাহ্ন

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়

রিপোটারের নাম / ৩৬ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

 

এইচটি বাংলা স্পোর্টস ডেস্ক : বোলারদের জন্য সহায়ক উইকেটে দারুণ ক্যামিও ইনিংস খেললেন শামীম হোসেন। পরে বল হাতে জ্বলে উঠলেন বোলাররা। অল্প পুঁজি নিয়েও ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় এটি।

কিংস্টনে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে বুধবার স্বাগতিকদের ২৭ রানে হারিয়েছে সফরকারী দলটি। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০তে নিশ্চিত করল টাইগাররা।

২০১৮ সালের পর টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। ২০২২ সালের পর দেশের বাইরে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ও এটি।

২০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পারে ৭ উইকেটে ১২৯। জবাবে ৯ বল বাকি থাকতে ১০২ রানে গুটিয়ে যায় উইন্ডিজ। দুই দলের মধ্যে সবচেয়ে কম রানের ম্যাচ এটি।

১২ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে সর্বোচ্চ ৩৫ রানে অপরাজিত ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক শামীম হোসেন। তানজিম হাসান সাকিব ১১ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন।

অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে তাদের জুটিতে ২৩ বলে আসে ৪১ রান। এটাই সফরকারীদের সেরা জুটি। এর বাইরে কেবল দুটি জুটি বিশের ঘরে যায়। সেগুলোর কোনোটারই রান রেট একশর বেশি নয়।

ব্যাটিংয়ের জন্য খুব সহায়ক নয় উইকেট। স্পিনাররা সহায়তা পান শুরু থেকেই। বাংলাদেশের রান এসেছে মূলত পেসারদের বোলিংয়ে। তিন স্পিনার আকিল হোসেন, রোস্টন চেইস ও গুডাকেশ মোটির ১০ ওভার থেকে এসেছে কেবল ৪৯ রান।

তবে দিনের সেরা বোলার হলেন বাংলাদেশের পেসার তাসকিন আহমেদ। নিজের প্রথম ওভারেই হানেন জোড়া আঘাত। শেষটাও টানেন তিনি। ৩.৩ ওভারে ১৬ রানে ৩ উইকেট নেন এই ডানহাতি পেসার।

দুটি করে উইকেট নেন মেহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিব। একটি শিকার ধরেন হাসান মাহমুদ।

ব্যাট হাতে এ দিনও ব্যর্থ লিটন কুমার দাস। কিন্তু নেতৃত্বে ছিলেন নিখুঁত। বোলিং পরিবর্তন, মাঠ সাজানো, প্রতিপক্ষকে চেপে ধরা ও চাপের রাখা, পরিস্থিদির দাবি মেটানো, সবকিছুই ছিল নজরকাড়া।

নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, ব্যাটিং ও বোলিংয়ের বড় দুই ভরসা তাওহিদ হৃদয় ও মুস্তাফিজুর রহমানকে ছাড়া সিরিজটি খেলছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পর দল ছিল কোণঠাসা। সেখান থেকে বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানে ঠাসা দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই সিরিজ জয়; সত্যিকার অর্থেই দারুণ কিছু।

লক্ষ্য তাড়ায় দুই ওভারে ১৯ রান তুলে ক্যারিবিয়ানদের শুরুটা ছিল দারুণ। কিন্তু বোলিংয়ে এসেই তাদের নাড়িয়ে দেন তাসকিন। প্রথম বলে খোঁচা মেরে লিটন দাসের গ্লাভসে ধরা পড়েন ব্রান্ডন কিং। ৫ বলে তিনি করেন ৮ রান।

তিন বল ডট খেলে পরেরটিতে ব্যাট চালিয়ে আন্দ্রে ফ্লেচার ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে। চমৎকার ক্যাচ নেন লিটন। ৪ বল খেলেও রান করতে পারেননি ফ্লেচার। আগের ম্যাচেও শূন্য রানেই ফিরেছিলেন তিনি।

পরের ওভারে জনসন চার্লসকে এলবিডব্লিউ করেন মেহেদি। এই স্পিনার নিজের পরের ওভারে ভয়ঙ্কর নিকোলাস পুরানকে মিড অফে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ বানান।

উইকেট শিকার উৎসবে যোগ দেন হাসান মুরাদও। অধিনায়ক রভমান পাওয়েল ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন মেহেদি হাসান মিরাজকে। ৭.২ ওভারে ৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় উইন্ডিজও।

পরের ওভারে রোমারিও শেফার্ডকে প্রথম স্লিপে ক্যাচ বানান তানজিম। ৪২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় ক্যারিবীয় ইনিংস।

এরপরই নিজেদের সর্বোচ্চ জুটি পায় স্বাগতিকরা। আকিল হোসেনকে নিয়ে ৪৯ বলে ৪৭ রানের জুটিতে নেতৃত্ব দেন রস্টন চেইস।

৩৪ বলে ৩২ রান করা এই মিডল অর্ডারকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন রিশাদ হোসেন। পরের বলে গুড়াকেশ মোটিতে লং অফে মেহেদির হাতে ক্যাচ বানান এই লেগ স্পিনার।

বাংলাদেশের জয় তখন নাগালে। আলজারি জোসেফকে ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে নিজের দ্বিতীয় শিকার ধরেন তানজিম। পরের ওভারে আকিলকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের উপলক্ষ্য এনে দেন তাসকিন। ৩১ বলে ৩১ রান করেন আকিল।

টসে হেরে ব্যাটে নামা বাংলাদেশ এদিন উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন আনে। সৌম্য সরকারের সঙ্গে ইনিংস শুরু করেন লিটন, তিনে তানজিদ হাসান। তবে পারফরম্যান্সে পরিবর্তন আসেনি।

খারাপ সময় পার করতে পারেননি লিটন। আকিল হোসেনের স্পিনে বারবার অস্বস্তিতে পড়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক স্টাম্পড হন ১০ বলে ৩ রান করে। পরের ওভারে রোস্টন চেইসের টার্নে বোল্ড তানজিদ (২)।

আফিফ হোসেনের জায়গায় একাদশে ফিরে মেহেদী হাসান মিরাজ চারে নেমে চেষ্টা করেন অস্বস্তির মেঘ সরানোর। আকিলকে স্লগ সুইপে ছক্কার পর চার মারেন তিনি কাট করে। পরের ওভারে বাউন্ডারিতে পাঠান তিনি চেইসকে। পাওয়ার প্লেতে তার পরও রান আসে ২৯।

ওপেনিং থেকে হাত খোলার সুযোগ না পাওয়া সৌম্য ৯ (১৮ বলে ১১) রান আউট হয়ে যান নবম ওভারে। মিরাজ শট খেলার চেষ্টায় বার দুয়েক অল্পের জন্য রক্ষা পেয়ে শেষ পর্যন্ত আউট হন ২৫ বলে ২৬ করে।

১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ছিল ৪ উইকেটে ৪৫। স্পিন বোলিংয়ের সামনে ঝড় তোলার জন্য ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়ার রিশাদ হোসেন থেমে যান একটি চার মেরেই। শেখ মেহেদি হাসানের ইনিংস শেষ হয় ১১ রানে।

আগের ম্যাচের মতো ছোট্ট কিন্তু কার্যকর ইনিংস উপহার দেন জাকের আলি। একটি করে চার ও ছক্কা মারার পর আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় বিদায় নেন তিনি ২০ বলে ২১ রান করে।

৮৮ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশের তখন ১০০ ছোঁয়া নিয়েই শঙ্কা। এরপরই তানজিমকে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া সেই জুটিটি গড়েন শামীম। বাংলাদেশ পায় লড়াইয়ের পুঁজি। যে পুঁজি নিয়ে ঐতিহাসিক এক জয়ের সাক্ষী হয় দলও।

একই মাঠে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ বাংলাদেশ সময় আগামী শুক্রবার ভোর ৬টায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৯/৭ ওভারে (লিটন ৩, সৌম‍্য ১১, তানজিদ ২, মিরাজ ২৬, জাকের ২১, রিশাদ ৫, মেহেদি ১১, শামীম ৩৫*, তানজিম ৯*; আকিল ৪-০-১৬-১, শেফার্ড ৩-০-২৬-০, চেইস ২-০-৮-১, জোসেফ ৪-০-২১-১, মোটি ৪-০-২৫-২, ম‍্যাককয় ৩-০-৩২-১)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৮.৩ ওভারে ১০২ (কিং ৮, চার্লস ১৪, ফ্লেচার ০, পুরান ৫, চেইস ৩২, পাওয়েল ৬, শেফার্ড ০, আকিল ৩১, মোটি ০, জোসেফ ০, ম‍্যাককয় ১*; হাসান ৩-১-২৩-১, মেহেদি ৪-১-২০-২, তাসকিন ৩.৩-০-১৬-৩, তানজিম ৪-১-২২-২, রিশাদ ৩-০-১২-২, মিরাজ ১-০-৮-০)


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ