আব্দুল মাবুদ মোহাম্মদ ইউসুফ ,বিশেষ প্রতিনিধি: আজ ইতিহাস সৃষ্টি করল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ‘মার্চ ফর গাজা’ নামে আয়োজিত ফিলিস্তিনপন্থী মহাসমাবেশে জনসমুদ্র আর গর্জন মিলেমিশে রচনা করল মানবতার অনন্য দলিল। হাজারো, না—লাখো হৃদয়ে ছিল একটাই ভাষা: গাজা তুমি একা নও!
সকাল থেকে রাজধানীর পথে পথে কেবলই এক দৃশ্য—গন্তব্য একটাই: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। গ্রাম-গঞ্জ থেকে ছুটে আসা সাধারণ মানুষ, তরুণ শিক্ষার্থী, প্রবীণ মুজাহিদ, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, পেশাজীবী, সাংবাদিক—সবাই যেন একটাই সত্তা হয়ে দাঁড়ায় গাজা নামক একটি জ্বলন্ত হৃদয়ের পক্ষে।
উদ্যান ছিল কানায় কানায় পূর্ণ, এমনকি আশপাশের রাস্তাও রূপ নেয় জনসমুদ্রে। “ইসরায়েল নিপাত যাক”, “ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ”, “গাজার কান্না থামাও”—এই স্লোগানে প্রকম্পিত হয় ঢাকা শহর।
ফিলিস্তিনের প্রতিচ্ছবি এই জনতার চোখে-মুখে
বক্তব্যে বক্তব্যে, চোখের জলে, clenched fist-এ, পতাকা ওড়ানোয়, কণ্ঠের ধ্বনিতে—প্রতিটি মানুষের ভেতর যেন বাস করছিল একজন গাজাবাসী। আয়োজনের শুরুতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের পর দেশজুড়ে পরিচিত ইসলামী চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন,
“গাজার শিশুরা আজ যেসব রাত কাটায়, তা আমাদের ঘুম হারাম করার জন্য যথেষ্ট।”
“-নেতা নয়, আজ মঞ্চে ছিল গাজা!
মঞ্চে কেউ নিজের দল, মত, ব্যানার তুলে ধরেনি। বক্তারা বলেছিলেন গাজার গল্প, বলেছিলেন ৭৫ বছর ধরে চলা জুলুমের ইতিহাস। বিশিষ্ট আলেম ও জনপ্রিয় মুফাসসির ড. মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, “গাজার মাটি আজ রক্তে রঞ্জিত। তাদের আর্তনাদ আমাদের বিবেক না জাগায়, তবে আর কবে?”
দৃশ্যপটে জনতা, স্লোগানে গর্জন
ছোট্ট এক ছেলেটি কাঁধে জাতীয় পতাকা বেঁধে বলছিল, “আমি গাজার ভাই, আমিও শহীদ হতে চাই।” দারুননাজাত মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বলেন, “……………….।”
ঢাকার রাস্তায় সৃষ্টি হয় বিশাল যানজট, তবুও কারও মুখে ক্লান্তির ছাপ ছিল না। কারণ এ যেন ক্লান্তি নয়—এ ছিল আত্মত্যাগ।
দোয়া ও আহ্বান
সমাবেশ শেষে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে পরিচালিত হয় বিশেষ মোনাজাত। মুফতি আব্দুল মালেক দোয়া করেন গাজার শহীদদের জন্য, মুক্তির জন্য, এবং জালিমদের ধ্বংসের জন্য।
“হে আল্লাহ! গাজার শিশুদের তুমি হেফাজত করো, আর যারা জুলুম করে তাদের তুমি ধ্বংস করো!”—এই দোয়ায় কাঁদলেন অনেকে, কেঁপে উঠল সারা মাঠ.
এই প্রতিবেদনটি শেষ নয়, এটি এক শুরুর ঘোষণা—বিশ্বের সকল জালিমের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনতার গর্জনের প্রামাণ্য দলিল। গাজা আজ একটাই বলছে: ‘বাংলাদেশ, আমি তোমাকে দেখেছি!’