এইচটি বাংলা ডেস্ক : মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স (ভাতা) যোগ করে পেনশন প্রদান এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতার নিরসন ছাড়াই বৈঠক থেকে বেরিয়ে গেছেন রানিং স্টাফ নেতারা।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে কমলাপুর রেলস্টেশনে বৈঠকে বসেছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারীও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।
বেলা দেড়টার দিকে কমলাপুর স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে এই বৈঠক শুরু হয়। বেলা ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রানিং স্টাফদের প্রতিনিধি সাইদুর রহমান সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দীর্ঘক্ষণ রেলসচিব, মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তবে কোনো সিদ্ধান্তে আমরা পৌঁছাতে পারিনি বলে ওই বৈঠক চলাকালীনই আমি চলে আসছি। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যাঁরা আছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করব। তবে আমরা আমাদের কর্মবিরতিতে অনড় আছি।’
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি জানিয়েছে, কর্মচারীদের অবসরোত্তর ৭৫ শতাংশ মাইলেজ মূল বেতনের সঙ্গে যোগ করে পেনশন নির্ধারণের বিধান প্রায় ১৬০ বছর ধরে চলমান ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে রেলওয়ের কোডিফাইড রুল অমান্য করে রানিং স্টাফদের পার্ট অব পে হিসেবে গণ্য মাইলেজ, যা যুগ যুগ ধরে বেতন খাতের অংশ ছিল, সেখান থেকে সরিয়ে টিএ খাতে নেওয়ার ফলে জটিলতা তৈরি হয়। এরপর ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায়।
কর্মচারী সমিতি আরও জানিয়েছে, ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ১০ এপ্রিল রানিং স্টাফদের কর্মবিরতিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে অর্থ মন্ত্রণালয় ১৩ এপ্রিল চিঠিটি প্রত্যাহার করে নেয়। পরে তৎকালীন রেলপথমন্ত্রী ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ১১ জুন তৎকালীন রেলওয়ের মহাপরিচালক স্পষ্ট করে রানিং স্টাফদের মাইলেজ যোগে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই বছরের ১৮ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আবারও আপত্তি জানায়। ফলে রানিং স্টাফদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।