শিরোনাম
চুয়েটে ইউআরপি বিভাগের “বিদায় ও বরণ” অনুষ্ঠান সম্পন্ন পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষায় দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় আবুল বারকাতকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পরিবেশ বিপন্ন হলে মানবাধিকার বিপন্ন হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল পোরশা উপজেলার অধিন গাংগুরিয়া থেকে কাদিপুর ১ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা।  ফেনীতে বন্যায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি । ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৫২৬ তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নেপালে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ জার্নালিস্ট কনফারেন্স থেকে প্রদত্ত সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরনিসমূহ সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম, বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তর । এইবার প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দিতে পারবেন : ইসি সানাউল্লাহ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের নামে সিঙ্গাপুরে থাকা ৬৪টি ব্যাংক হিসাব ও ১০ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন

 

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের নামে সিঙ্গাপুরে থাকা ৬৪টি ব্যাংক হিসাব ও ১০ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ

রিপোটারের নাম / ২০ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫

 

 

এইচটি বাংলা ডেস্ক :  আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের নামে সিঙ্গাপুরে থাকা ৬৪টি ব্যাংক হিসাব ও ১০ কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে বাংলাদেশের একটি আদালত।

 

এস আলম নামে বেশি পরিচিত সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে এক বিলিয়ন ডলার ‘পাচারের’ অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

 

সেখানে পরিবারের সদস্যসহ তার ব্যাংক হিসাব ও শেয়ার অবরুদ্ধ করার জন্য দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক ইব্রাহিম মিয়া বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. তানজির আহমেদ এ তথ্য দিয়ে বলেন, অবরুদ্ধের আদেশ হওয়া সম্পদের মধ্যে এস আলমের ৪০টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের ছয়টি ব্যাংক হিসাব এবং তাদের নামে থাকা আটটি কোম্পানির শেয়ারও রয়েছে এ তালিকায়।

 

এছাড়া, তাদের ছেলে আশরাফুল আলমের সাতটি ব্যাংক হিসাব ও একটি কোম্পানির শেয়ার, ছেলে আহসানুল আলমের সাতটি ব্যাংক হিসাব ও একটি কোম্পানির শেয়ার, ছেলে আসাদুল আলম মাহির একটি ব্যাংক হিসাব, তার শ্যালক আহমেদ বেলালের দুটি ব্যাংক হিসাব ও বোন মাইমুনা খানমের একটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে।

 

দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক ব্যাংক হিসাব এবং শেয়ার অবরুদ্ধ চেয়ে এই আবেদন করেন।

 

তার আবেদনে বুধবার এস আলমের নামে তিন ব্যাংকে থাকা ৫৩টি হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় একই আদালত।

 

২৪ জুন এস আলমের সাইপ্রাসে থাকা দুইতলা বাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া সাইফুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের নামে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে থাকা ১৯ কোম্পানির শেয়ার ও জার্সিতে থাকা ছয়টি ট্রাস্ট কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধেরর আদেশ দেওয়া হয়।

 

চট্টগ্রামভিত্তিক এই শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার এস আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক খাতে ‘অনিয়ম-লুটপাট’ ও অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

 

এ কারণে গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে-পরে আলোচনায় ছিলেন এই ব্যবসায়ী ও তার পরিবার।

 

পরে এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলোতে নতুন পর্ষদ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক এসব ব্যাংক থেকে বহু টাকা নিয়েছে এস আলম।

 

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে সে বছর অগাস্ট মাসে সিঙ্গাপুরে এক বিলিয়ন ডলার ‘পাচারের’ অভিযোগে এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনের বিরুদ্ধে বন্ধ থাকা অনুসন্ধান আবারও শুরু করে দুদক।

 

২০২৩ সালে দুদক অনুসন্ধানে নামলেও ওই বছরের ২৪ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও দুদকের অনুসন্ধান সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করে হাই কোর্ট।

 

এরপর গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে ‘অর্থ পাচারের’ অভিযোগের অনুসন্ধান নিয়ে পাঁচ মাস আগে হাই কোর্টের দেওয়া স্বতঃপ্রণোদিত রুল খারিজ করে আপিল বিভাগ। এতে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়।

 

সেই আদেশের কপি পাওয়ার পর অনুসন্ধানটি পুনরায় শুরু করে দুদক। নথিপত্র চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউকে।

 

দুদক ২০২৩ সালের ১৩ অগাস্ট এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর উদ্যোগ নেয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে ৪ অগাস্ট প্রকাশিত ‘এস আলম’স আলাদিন‘স ল্যাম্প’ শিরোনামে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে।

 

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলম সিঙ্গাপুরে ‘কমপক্ষে এক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য’ গড়ে তুলেছেন। যদিও বিদেশে বিনিয়োগ বা অর্থ স্থানান্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত কোনো অনুমতি তিনি নেননি।

 

গত বছরের নভেম্বরে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক আলোচনায় সভায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেছিলেন, “সম্প্রতি একটি শিল্প গ্রুপের মালিক নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করে বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করেছে। এস আলম গ্রুপের এই কর্ণধার বলেছেন, তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কর্তৃক ভিত্তিহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি মামলা করতে পারেন।”

 

গত বছরের ৭ অক্টোবর এস আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ তার পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

 

চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি এস আলম পরিবারের ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়।

 

এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার পাঁচশো টাকা মূল্যের ১৭৫ বিঘা সম্পদ জব্দের আদেশ দেওয়া হয়।

 

১২ ফেব্রুয়ারি ৪৩৭ কোটি ৮৫ লাখ ২ হাজার ২৭৪ টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত। এসব শেয়ারের মূল্য ৫ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।

 

এস আলমের ৮ হাজার ১৩৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি।

 

১০ মার্চ এস আলমের এক হাজার ছয় বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত।

 

৯ এপ্রিল তার ৯০ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। একইদিন আদালত তার ঘনিষ্ঠজনদের নামে থাকা ৩৭৪ টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে।

 

এরপর ১৭ এপ্রিল এস আলম ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে থাকা এক হাজার ৩৬০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়।


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ