এফ আই রানা , লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি: লালমনিরহাট জেলাধীন পাটগ্রাম উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দুর্নীতির খবর প্রকাশের পর বিভাগীয় তদন্ত কমিটি তদন্ত করেছেন।
উল্লেখ্য যে, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকায় ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি :ঘুষ ছাড়া ফাইল সই করেন না পাটগ্রামের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম মর্মে একটি খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়াও অন্যান্য গণমাধ্যমে খবর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফি) আবুল কালাম আজাদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে চাকুরি সমতাকরণের কাজ না করার একাধিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
জানা যায়, এসব ঘটনা তদন্তে রংপুর বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক (ডিসিএ) মো. কামরুজ্জামান গত ২৮ মে তিন সদস্যের তদন্ত টিমের প্রধান ডেপুটি ডিভিশনাল কন্ট্রোল অব একাউন্টস্ (অতিরিক্ত বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রক) রফিকুল ইসলাম খান ও সুপার আব্দুল মান্নান এবং অডিটর মঞ্জুরুল ইসলামকে সদস্য করে সরেজমিনে তদন্ত করে পরবর্তী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। তদন্ত টিম গত রোববার (২৮ মে) বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের নিকট ঘটনা শুনেন ও অভিযোগের লিখিত নেন।
গত ১৭ মে পাটগ্রাম উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আইবাস প্লাস ও পে ফিক্সেশন অনলাইনে বেতন নির্ধারণী তথ্য হাল নাগাদ করতে প্রথম দফায় ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি ও ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নামে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পরবর্তীতে আবারও টাকা নেওয়ার লিখিত অভিযোগ ঢাকার হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কাছে দেন পাটগ্রাম উপজেলার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ। টাকা নিয়ে চাকুরি সমতাকরণের কাজ করে না দেওয়ায় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে আত্মহত্যা করার হুমকিও দিয়েছেন এ কর্মচারী। তদন্ত টিম এদিন আজাদের নিকট লিখিত বক্তব্য নেন। একই সময়ে উপজেলার ২০-২৫ জন সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকও উপস্থিত থেকে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা টাকা নিয়ে বেতন সমতাকরণের কাজ করে না দেওয়ার নানা অভিযোগ করেন। এ সময় লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলার মহিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আশরাফুল আলম সিদ্দিকী। তদন্ত টিমের নিকট উপজেলা যুব উন্নয়নের সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম একটি বকেয়া বিল উত্তোলনে ও অন্যান্য কাজে ৩১ হাজার টাকা নিয়েছেন উল্লেখ করে লিখিত দেন।
তদন্ত টিমের সামনে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম শিক্ষকসহ অন্যান্যদের অভিযোগ মিথ্যা, সাজানো বলে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের তাঁর কক্ষ হতে বের হয়ে যেতে বলে খারাপ আচরণ করেন।
এ ব্যাপারে তদন্ত টিমের প্রধান রফিকুল ইসলাম খান বলেন, এ ধরণের ঘটনায় মর্মাহত। সেবা প্রদানে যাতে সমস্যা না হয় এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া আছে। পাটগ্রামে যে মনোভাব দেখা গেলো তাতে আমরা ব্যথিত। এখানকার বিষয় ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।