এফ আই রানা,লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা টাকা নিয়ে চাকুরি সমতাকরণের কাজ করে না দেওয়ায় এবার তাঁর কার্যালয়ে আত্মহত্যা করার কথা প্রকাশ্যে জানালেন তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মচারী। বুধবার (২৪ মে) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশে এ কথা বলেন ওই কর্মচারী।
গত ১৭ মে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে কাজ না করার লিখিত অভিযোগ ঢাকার হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কাছে দেন পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফি) তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ।
অভিযোগে আজাদ উল্লেখ করেন- ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফি) পদের সরকারি এ চাকুরিতে যোগদেন। একই পদের কনিষ্ঠ কর্মচারীদের বেতন পূর্বে যোগ দেওয়া কর্মচারীদের বেতনের চেয়ে বেশি হওয়ায় ২০০৫ সালে বেতন সমতাকরণে জাতীয় বেতনস্কেল অনুযায়ী তথ্য বিবরণী হালনাগাদ করতে আদেশ দেয় সরকার। সে অনুযায়ী সরকারের আইবাস প্লাস ও পে ফিক্সেশন অনলাইনে বেতন নির্ধারণী তথ্য হাল নাগাদ করতে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের নিকট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ২০১৯ সালের জুলাই মাসে জমা দেন আবুল কালাম আজাদ। ওই সময় ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন সিরাজুল। একপর্যায়ে ৩৫ হাজার টাকা দেওয়া তাঁকে। ৯ মাস পর ঘুরানোর পর সমতাকরণের কাজ না করে ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেন তিনি (সিরাজুল)। পরবর্তীতে তাঁরই পরামর্শে নাটোর জেলার লালপুর, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার একই পদের কর্মচারীদের বেতন সমতাকরণের প্রমাণপত্র সংগ্রহ করে ২০২২ সালের অক্টোবরে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়। এতে তিনি কাজ করে দিতে চেয়ে আগের ১০ হাজার টাকা বাদ দিয়ে নতুন করে ৩০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। টাকা নিয়ে আবারও হয়রানি করতে থাকলে এ নিয়ে গত বুধবার (১৭ মে) দুপুরে ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে তিনি (সিরাজুল) আজাদকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।’ ওইদিনই হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন আজাদ। অভিযোগের কপি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে দেন তিনি। এ ঘটনার পর হতে নিয়মিত কার্যালয়ে আসেন না সিরাজুল ইসলাম। বুধবার (২৪ মে) ঢাকা হতে পরিদর্শন শাখা (আইসিইউ) হতে সাইফুল ইসলাম পাটগ্রাম উপজেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয় পরিদর্শনে আসেন। এদিন বহিরাগত বেশ কিছু লোকজনদেরকে তাঁর কার্যালয়ে বসে রাখেন ও কার্যালয়ে প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে রাখেন।
পাটগ্রাম উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম কার্যালয়ে বহিরাগত লোকজন রাখার ব্যাপারে বলেন, তাঁরা কাজের জন্য এসেছে। কি কাজের জন্য এসেছে এটি স্পষ্ট করে জানাতে পারেন নি। তিনি সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তিনি ও বহিরাগত ৩-৪ জন ব্যক্তি সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন। পরে কার্যালয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।’
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসানকে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ও বহিরাগতদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানালে, তিনি বলেন, ‘হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে বহিরাগত লোক রাখা ঠিক হয়নি। ব্যাপারটি দেখবো।