এইচটি বাংলা স্পোর্টস ডেস্ক : ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট। আঙুলে চোট পেলেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। তার জায়গায় গ্লাভস হাতে দেখা গেল ইমরুল কায়েসকে, দায়িত্ব সামলালেন ১২০ ওভার। নতুনভাবে নিজেকে চেনালেন কায়েস। এর পরে ব্যাট হাতে ১৫০ রানের ইনিংস খেললেন বাঁহাতি এই ওপেনার। সেই কায়েস এবার সাদা পোশাকের ক্রিকেট থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে সুযোগ হয়নি ইমরুলের। অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে ৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ব্যাট থেকে এসেছে ১ হাজার ৭৯৭ রান। সেঞ্চুরি আছে ৩টি এবং হাফ সেঞ্চুরি ৪টি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১৫০। টেস্ট ব্যাটিং গড় ২৪.২৮। জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে। এবার শেষটা দেখে ফেললেন ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। আপাতত লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যে জাতীয় লিগ দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল ইমরুলের সেই টুর্নামেন্ট দিয়েই নিজের শেষটা করবেন আগামী ম্যাচে। ২০০৭ সালে খুলনা বিভাগের হয়ে শুরু হয়েছিল তার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। শেষটাও হচ্ছে এই দলের হয়ে। আগামী ১৬ নভেম্বর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে সাদা পোশাকে নিজের শেষ ম্যাচটি খেলতে নামবেন ইমরুল কায়েস। ম্যাচটির সময় চার দিন। এরপরে আর টেস্ট ক্রিকেটে দেখা যাবে না মেহেরপুরের এই ক্রিকেটারকে।
এরপরে তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ও ঘরোয়া ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাবেন। বিপিএলের ১১তম আসরে তাকে দলে ভিড়িয়েছে খুলনা টাইগার্স। গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইমরুল কায়েস লিখেছেন, ‘বিদায় টেস্ট ক্রিকেট। আপনাদের ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞ।’ আর এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমি খুব শিগগিরই আমার ক্যারিয়ারের একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। আমি আগামী ১৬ নভেম্বর (শনিবার) আমার টেস্ট ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করতে যাচ্ছি এবং সেই সঙ্গে আমি আমার প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারেরও সমাপ্তি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। এটি আমার ক্যারিয়ারের ১৭ বছরের সবচেয়ে কঠিন ও আবেগের একটি মুহূর্ত।’
জাতীয় দলের হয়ে ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল ইমরুলের। এই ফরম্যাটে ৩৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ব্যাট থেকে এসেছে ১ হাজার ৭৯৭ রান। সেঞ্চুরি আছে ৩টি এবং হাফ সেঞ্চুরি ৪টি। সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ১৫০। টেস্ট ব্যাটিং গড় ২৪.২৮। জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৯ সালে ভারতের বিপক্ষে। সে বছরের ২২ নভেম্বর কলকাতার ইডেন গার্ডেনে শুরু হওয়া সেই ম্যাচটি ছিল গোলাপি বলে দিবা-রাত্রির টেস্ট। দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট ৯ রান করেছিলেন ইমরুল। তারপর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে চলে যান এই ক্রিকেটার।
ওয়ানডেতে জাতীয় দল থেকে ইমরুল বাদ পড়েছিলেন ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের পর। আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা ম্যাচটাই তার শেষ ম্যাচ হয়ে আছে। লাল-সবুজের জার্সিতে তিন ফরম্যাটে ১৩১ ম্যাচ খেলেছেন। ৭ সেঞ্চুরিতে মোট রান ৪ হাজার ৩৫০।
অন্যদিকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৩৭টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে টাইগার এই ব্যাটারের। প্রায় ৩৪ গড়ে করেছেন ৭ হাজার ৯৩০ রান। তার ব্যাট থেকে এসেছে ২০টি সেঞ্চুরি ও ২৭টি হাফ সেঞ্চুরি। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ১০ নম্বরে রয়েছেন ইমরুল কায়েস।