শিরোনাম
শেখেরটেকে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জননেতা মাওলানা মোঃ জাহাঙ্গীর আলম অসুস্থ অবস্থায় ময়মনসিংহের মাজার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অভিনেতা সমু চৌধুরীকে। ভারতের বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ১৩৩ জন আরও বাড়ার আশঙ্কা। লাউয়াছড়ায় ডাকাতির ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী গ্রেপ্তার মাত্র ৩ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ।   নরসিংদী-০৪ আসনে ইসলামী আন্দোলনের হোন্ডা শোডাউনে চমক কুরআনের পক্ষে কথা বলার জন্য মাওলানা মো. জাহাঙ্গীর আলমকে আমরা সংসদে পাঠাতে চাই  : মাওলানা মোতালিব হোসেন বরকতী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নবীন বরন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত।  তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন। নির্বিঘ্নে সম্পন্ন মনোহরদীর ঐতিহ্যবাহী কাছিটান প্রতিযোগিতা, বিজয়ী দল পেল মহিষ
শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ০৯:০৯ পূর্বাহ্ন

 

দুর্নীতিবাজদের বিদেশ পাড়ি ; রহস্যময় এক ধুম্রজাল – মোহাম্মদ আলী

রিপোটারের নাম / ২১৯ বার পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪

দুর্নীতি এই শব্দটি এখন দেশের সবচাইতে আলোচিত শব্দ। দুর্নীতি দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক, নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোন আদর্শের নৈতিক বা আধ্যাত্মিক অসাধুতা বা বিচ্যুতিকে নির্দেশ করে। বৃহৎ পরিসরে ঘুষ প্রদান , সম্পত্তির আত্মসাৎ এবং সরকারি ও রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করাও দুর্নীতির অন্তর্ভুক্ত। দেশের প্রতিটা দেশেই হচ্ছে দুর্নীতি। আমরা সচারচার ভাবে দুর্নীতির সংজ্ঞা বিশ্লেষন করলে এটাই বুঝি যে, অবৈধ ভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে যা কিছু আদান প্রদান করা হয় সেটাই দুর্নীতি। বর্তমান দেশে দুর্নীতি এক চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এটি মারাত্মক ভাবে সমাজের মানুষের মাঝে মিশ্রণ হয়ে আছে। দুর্নীতি একটি সমাজ এবং দেশকে শেষ করে দিতে সক্ষম। টিভি চ‍্যানেল পত্র পত্রিকার পাতা খুললেই শুধু দুর্নীতি আর দুর্নীতি। প্রতিটা সেক্টরেই দুর্নীতির মহাউৎসব চলছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিভক্ত হওয়ার পর, বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি বেসামরিক ও সামরিক সরকারের দ্বারা শাসিত হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনকে ঘিরে দাঙ্গার ফলে শত শত লোক মারা যায় এবং ফ্রিডম হাউস দেশের “রাজনৈতিক অধিকারের” রেটিং ৩ থেকে ৪ এ পরিবর্তন করে (রেটিং ১ হলে অবস্থা ভালো এবং ৭-এর বেশি হলে খারাপ)। অত্যন্ত মারাত্মক রাজনৈতিক সহিংসতার আধুনিক ইতিহাসে এটি ছিল শুধুমাত্র একটি ঘটনা।

 

বিশ্বব্যাপী আইনের শাসনের সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ২০১১ সালে ২৮.৬ (০-১০০ স্কেলে) থেকে ২০১৩ সালে ২২.৭-এ নেমে আসে। বাংলাদেশে দূর্নীতির প্রধান কারণ হিসেবে এ আইনের শাসন না থাকা ও দূর্নীতিবাজদের বিচার না হওয়াকে দায়ী করা হয়। এছাড়া নেতিবাচক রাজনৈতিক প্রভাব ও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাবেকেও বাংলাদেশে দুর্নীতির উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। যারা দুর্নীতি করছে তাদের কাছে মনেই হয় না যে এটা একটা অপরাধ। আর মনে না করাই স্বাভাবিক কারণ দুর্নীতির সঠিক বিচার বা শাস্তি তো ভোগ করতে হচ্ছে না। দেখা যায় কেউ ১০ কোটি টাকা দুর্নীতি করে আয় করলো কিন্তু যখন সেটা প্রকাশে আসে তখন তার বিরুদ্ধে মামলা হয় কিংবা সামান্য পরিমাণে কিছু টাকা খরচ করলেই সব ঠান্ডা। এই দুর্নীতিবাজদের পিছনেও রয়েছে শক্ত হাত। সমাজের সুইপার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত দুর্নীতি চলছে। মানুষ কিংবা পেশা অনুযায়ী হচ্ছে দুর্নীতি। আগে রাজনৈতিক নেতারা দুর্নীতির সাথে যুক্ত থাকার বিষয়ে সামনে আসতো ; কিন্তু এখন পুরোপুরি উল্টো দেখা যায়- বড় বড় সরকারি কর্মকর্তা এবং ব‍্যবসায়ীরাই এর সাথে জড়িত। পিতা সরকারি চাকরি করে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করছে আর সন্তানেরা সেই অবৈধ অর্থ দিয়ে বিলাশী জীবন যাপন করছে। সম্প্রতি দেখা ছাগলকান্ড নিয়ে প্রকাশ‍্য এলো এনবিআর কর্মকর্তার দুর্নীতির চিত্র শুধু তাই নয় কেচো খুড়তে যেনো সাপ বেরিয়ে আসার মতো ঘটনা ঘটেছে। দেখা যায় স্বামীর দুর্নীতির পাশাপাশি স্ত্রী এমনকি সন্তানদের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলে। যারা দেশের আইন সৃঙ্খলা রক্ষা করবে এবং দেশের মানুষের জানমাল হেফাজত করবে সেই সমস্ত পুলিশরাও আছে দুর্নীতির সাথে। বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর এর দুর্নীতির কান্ডে টনক নড়ছে মহলে। দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে দুর্নীতিবাজরা। এই সমস্ত দুর্নীতিবাজরা উপরের মহলের সংশ্লিষ্টতা থাকার কারণেই করতে সাহস পাচ্ছে। দুর্নীতি প্রমাণিত হলেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় বিদেশে। এটা একটি রহস্যময় ধুম্রজাল হিসেবে দেখছে সাধারণ মানুষ। দুর্নীতির খবর প্রমানিত হওয়ার পর বিদেশে পাড়ি দেওয়ার কিছু কারণ ব‍্যাখা করা যায়; যেমন যাদের দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে তাদের সাথে নিশ্চয়ই উপরের কোন রাঘববোয়াল জড়িত আছে না হয় টাকা পয়সা ভাগাভাগি করে তাকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া এটিও হতে পারে। তা না হলে কিভাবে তারা সকলের চোখে কালো চশমা পড়িয়ে বিদেশ পাড়ি দিবে? এই আলোচনা হচ্ছে সর্বমহলে। এভাবে যদি দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতি করে বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় তাহলে কখনোই দেশ থেকে দুর্নীতিবাজ কমবে না বরং দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। সমাজে এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে দুর্নীতিবাজরা। ভালো ভাবে অভিযান করতে পারলেই বের হয়ে আসবে অনেক দুর্নীতিবাজ রাঘববোয়ালের নাম। এই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ, ও দুর্নীতি প্রতিরোধে ২০০৪ সালে গঠিত হয় দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক। কিন্তু এতসব করেও দেশ থেকে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে না বরং দুর্নীতিবাজরা বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতি করে যাচ্ছে এবং তা আবার আইনের চোখে বৃদ্ধাঙ্গুলী দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে দুর্নীতি করা নিয়ে মনে হচ্ছে প্রতিযোগিতা চলছে ; যে যেভাবেই পারছে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে দেখা যায় সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর ভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান করা হয় কিন্তু তা সাময়িক। তবে দুর্নীতি রোধ করার জন্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলেও সরকারের মধ্যে অনেকেই চায় না ; কারণ তাদের মধ্যেও দুর্নীতিবাজ রয়েছে। সরকার যেভাবে দেশ উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে তা যদি সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন করতে চায় তাহলে অবশ্যই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরী। সরকার যদি একটু সদিচ্ছা ভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থা নেয় তাহলে আমরা বিশ্বাস করি দুর্নীতি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে আসবে আর আমরা সেটাই সরকারের কাছে প্রত‍্যাশা করি।


এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ