স্টাফ রিপোর্টার, ছাতকঃ
সুনামগঞ্জের ছাতকে ব্যক্তি মালিকানাধিন প্রতিষ্ঠান নিটল-নিলয় গ্রুপ সীমানায় ড্রেন ও দেওয়াল নির্মাণ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। ছাতক পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের বাশখলা এলাকাবাসীর অভিযোগ ড্রেন ও দেওয়াল নির্মিত হলে স্থানীয় হাওর বিলে কৃষি জমিতে ফসলহানীসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে ড্রেন ও দেওয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে এবং এলাকাবাসীর ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবীতে সম্প্রতি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষে তালেব আলী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ছাতক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু নাছের বুধবার এলাকায় সরজমিন পরিদর্শন করেন এবং এলাকাবাসী ও মিল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। এসময় স্থানীয় লোকজন ড্রেন ও দেওয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ করার দাবী জানান। বাঁশখলা গ্রামের বাসিন্দা কামাল মিয়া বলেন, বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ সিলেট পাল্প এন্ড পেপারমিলটি তৎকালিন বিএনপি জামায়াত সরকারের আমলে শত কোটি টাকার সম্পদ পানির দরে বিক্রি করে দেয় নিটল-নিলয় গ্রুপের কাছে। মিল কর্তৃপক্ষ কারখানাটি দায়িত্ব নেওয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসীর লোকজনকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও চাকুরী প্রদানের আশ্বাস দিলেও কোন কথা রাখেনি। ক্ষতিগ্রস্থ রোগাক্রান্ত রনজু পাল অভিযোগ করে বলেন, কুমনা মৌজার জেএল নং ২১৫, ৫৯৯ ও ৬০০ দাগে ৮৮শতক, ৪৬৯ দাগে বাড়ি ৫শতক। মোট ৯৩ শতক ভূমি জোর পূর্বক নিয়ে গেছে মিল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সম্প্রতি তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুছসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও আজও কোন সুরাহা হয়নি। জমির আলী বলেন, মাধবপুর মৌজার তার ৩ কেদার জমি মিল কর্তৃপক্ষ নিলেও কোন টাকা পয়সা দেয় নাই। দুদু মিয়া বলেন, ২০২১ সালে জমিতে মাটি ভরাট করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। সে সময় পুলিশ দিয়ে রেকর্ডিয় ও খাস জমি দখলে নেয়। মিলের ভিতরের তার খামারগাঁও মৌজার ৬৩/৬৪ স্মারকে নামজারি করেছে মাধবপুর কুমনা মৌজার ৪৯ নং স্মারকে ৭০-৭১ সালে। সাবেক মেম্বার আবদুস ছত্তার বলেন, খাস জায়গা দখল করে যে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে, এতে এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি অত্র অঞ্চলের কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সাবেক কাউন্সিলর শামছু মিয়া ও ধন মিয়া বলেন, মিল কর্তৃপক্ষ যে ভাবে ড্রেন নির্মাণের কথা ছিল ওই ভাবে করা হচ্ছেনা। তারা বর্তমানে ড্রেনের পানি ফসলি জমিতে ফেলার পরিকল্পনা করছে। আমরা কোন অবস্থাতেই এখানে ড্রেন নির্মাণ করে ফসলী জমির ক্ষতি করতে দেবনা। এ বিষয়ে নিটল-নিলয় গ্রুপের নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ এসব অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি। ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আবু নাছের অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো হবে। ##