ছাতক প্রতিনিধিঃ
সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতর ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের ০৯নং ওয়ার্ডের কচুদাইড় গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর মোঃ আজিজুল (২৯)। ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম নিয়ে তিনি এখনো সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালের ৩য় তলার ৯নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে বাঁচাতে চিকিৎসা ব্যয়, ওষুধ ও অন্যান্য খরচ মেটাতে ইতোমধ্যে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
গত ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে ছাতক থেকে কুমিল্লাগামী রিয়েল কোচে করে যাত্রা পথে শায়েস্তাগঞ্জ থানাধীন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কদমতলী এলাকায় দ্রুতগতির দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন আজিজুল। দুর্ঘটনার পর দ্রুত হাসপাতালে নিলে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকগণ। দুই পায়ে তিন দফা অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হলেও এখনো তাঁর ব্রেইন কন্ডিশন স্বাভাবিক নয়। চোখেও গুরুতর জটিলতা দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন— ব্রেইনের অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত চোখের অস্ত্রোপচারও করা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে আগামীকাল ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ দিলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি। দরিদ্র সংসারে দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল এই মানুষটির চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেলে তা হবে পরিবারটির জন্য এক অপূরণীয় বিপর্যয়।
আজিজুলের বৃদ্ধ পিতা মোঃ রংগু মিয়া বলেন, বাবার মত করে বলতে গেলে আমার ছেলে এখনো কথা বলতে পারে না, ঠিকমতো চোখও খুলতে পারে না। চিকিৎসা ছাড়া সে বাঁচবে না। বাড়িতে নিয়ে গেলে আমাদের পক্ষে তার চিকিৎসা করা অসম্ভব। আল্লাহর কাছে চাই, হাসপাতাল যেনো তাকে সুস্থ না করা পর্যন্ত ছেড়ে না দেয়।
আজিজুলের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমরা গরিব মানুষ। ধার-দেনা করে যতটুকু পারছিলাম করেছি। এখন আর পারছি না। আমার স্বামীকে এই অবস্থায় ছাড়পত্র দিয়ে দিলে আমরা কোথায় যাব? যারা পারেন, আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ-আমার স্বামীকে সুস্থ করে দিন।
রোগীর চিকিৎসায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সামাজিক ব্যক্তিবর্গ ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রতি মানবিক আবেদন জানিয়ে বলেন
একজন দরিদ্র পরিবারের একমাত্র ভরসাকে এই অবস্থায় বাড়ি পাঠানো অমানবিক সিদ্ধান্ত হবে। দ্বিতীয়বার জীবন ফিরে পেতে আজিজুলের প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও পূর্ণ সার্বিক পর্যবেক্ষণ।
এলাকাবাসীর পক্ষে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা হাসপাতালের পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদনও জমা দিবেন যেখানে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে সরকারি খরচে চিকিৎসা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করে।
উল্লেখ্য, আজিজুলের দুর্ঘটনার খবর ইতোমধ্যে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তি, দাতা সংস্থা এবং মানবিক সংগঠনগুলোর কাছে তার পরিবারের আবেদন মানুষ মানুষের জন্য। একটি দুঃখী পরিবারকে বাঁচাতে আপনাদের সাহায্য আজিজুলকে নতুন জীবন দিতে পারে।
সাহায্য পাঠানোর বিকাশ নম্বর: ০১৮৭৭-৮৫০৭৯৫।