চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: এখনো বসেনি একটিও স্টল। মাঠজুড়ে শুধু স্টলের অবকাঠামো। খুঁটি গেড়ে কেবল কাঠামো নির্মাণ হলেও স্টলে নেই চেয়ার, টেবিল কিংবা সাজসজ্জা। এ অবস্থায় চট্টগ্রামে নগরে ছয় দিনব্যাপী বিজয় মেলার উদ্বোধন করল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় সার্কিট হাউসসংলগ্ন মাঠে মেলার উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন।
জেলা প্রশাসন বলছে, মাঠ নিয়ে জটিলতার কারণে শেষ মুহূর্তে মেলার স্থান পরিবর্তন করা হয় ৫ ডিসেম্বর। গত সোমবার মেলার স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে লটারির মাধ্যমে। স্টল বরাদ্দ হলেও এখনো দোকানিরা আসেননি। তবে বিকেল নাগাদ দোকানিরা দোকান গুছিয়ে নেবেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় ২০৪টি স্টল রয়েছে। টিনঘেরা এসব স্টলের অধিকাংশই খালি। মেলার এক পাশে কিছু স্টলে বিদ্যুৎ ও অন্যান্য সংযোগের কাজ চলছে। তিনটি দোকানে সাজসজ্জার কাজ চলছে। মাঠের এক প্রান্তে উদ্বোধন মঞ্চ। প্রবেশ পথের বাঁ পাশে এখনো স্টলগুলোয় টেবিল বসানোর কাজ করছেন কয়েকজন।
এদিন বেলা ১টার দিকে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক প্রথম আলোকে বলেন, দোকানের স্ট্রাকচার (অবকাঠামো) তৈরি হয়ে গেছে। দোকানি চাইলেই বসে যেতে পারবেন। বিকেলের মধ্যেই হয়তো তাঁরা এসে যাবেন।
বিগত বছরগুলোয় চট্টগ্রামে বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়েছে নগরের আউটার স্টেডিয়াম মাঠে। জেলা প্রশাসনের খেলার মাঠের মেলা না করার সিদ্ধান্তের পর সে মাঠে আর মেলা হয়নি। তবে এ বছর বিজয় মেলার জন্য আবারও আউটার স্টেডিয়ামকে বেছে জেলা প্রশাসন। পরে সেখান থেকে রেলওয়ের মালিকানাধীন সিআরবির মাঠে মেলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৫ ডিসেম্বর মেলার স্থান আবারও পরিবর্তন করে ভেঙে ফেলা চট্টগ্রাম শিশুপার্কের মাঠে নিয়ে আসা হয়।
এদিন বেলা ১১টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. নোমান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান প্রমুখ।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘গণমাধ্যমের আপত্তির কারণে নয়, আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মেলা সরিয়ে নিয়েছি। ওটা খেলার মাঠই থাকবে। মাঠটি সংস্কারের জন্য উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করব।’
চট্টগ্রামে মেলার জন্য স্থায়ী মাঠের প্রসঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন বলেন, ‘আমরা এই বাংলাদেশকে বৈষম্যমুক্ত করতে চাই। সে ক্ষেত্রে আমাদের কৃষ্টি–সংস্কৃতি তুলে ধরতে হবে। এ জন্য একটি মাঠের প্রয়োজন। আমরা সবার সঙ্গে বসে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
‘চলো দুর্জয় প্রাণের আনন্দে’ এই স্লোগান নিয়ে আয়োজিত এ মেলা চলবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ছয় দিনব্যাপী এই মেলায় নাচ, গান, নাটক, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন রয়েছে। মেলায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য, নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য, বৃক্ষ, ফুল, বইসহ নানা পণ্য বিক্রি হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।