জহর হাসান সাগর, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : পশ্চিম ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় তালা উপজেলায় বিরামহীন ভাবে শুরু হয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত। ফলে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। এতে মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) তালা উপজেলায় গভীর রাত্র থেকে থেমে থেমে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত। কিন্তু সকাল হতে বিরামহীন ভাবে চলতে শুরু করে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এই বৃষ্টির কারণে জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছেন। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে ক্ষেত থাকা পাকা ও আধাপাকা আমন ধান এবং শীতকালীন শাক-সবজি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।
তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে দিনমজুর, ইজিবাইক চালক ও ভ্যানচালকদের কাজ করতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। বাজার, দোকান-পাট ও যানবাহনে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে। উপ-শহরের মূল বাজারে ক্রেতাদের আগমনও কমে গেছে।
রিকশাচালক কহিনুর ইসলাম ও ইজিবাইক চালক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ভিজে ভিজে চালাচ্ছি কিন্তু যাত্রীও কম। দিনে যা আয় করি, আজ তার অর্ধেকও হবে না।’
স্থানীয় বাসিন্দা সাহেব আলী বলেন, হঠাৎ এই বৃষ্টির কারণে অনেকেই শীতবস্ত্র নিয়েও ঘরের বাইরে বের হতে পারছে না। কৃষকদেরও কিছুটা সমস্যা হচ্ছে, কারণ ধান শুকানোর কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মহিলাদের কুমড়ার বড়ি ভিজে গিয়েছে।
সবজি বিক্রেতা জাহিরুল সরদার বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বাজারে কোনো ক্রেতা নাই। আর বৃষ্টির পাশাপাশি ঠান্ডাও বেড়েছে। তাই খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাজারে আসছে না। আজ লাভ করা তো দূরের কথা, আসল টাকাই উঠবে না।’
এদিকে ঠান্ডাজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু সহ সকল শ্রেণীর মানুষ। বিশেষ করে নিউমোনিয়া, হাঁচি-কাশি, সর্দি-জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। রোগে আক্রান্তদের মধ্যে সিংহভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। শিশুদের যাতে ঠান্ডা না লাগে সেজন্য সর্বদা গরম পোশাক পরিধান করানোর পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত যে কোনো রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, আজ সাতক্ষীরায় এক মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর পাশাপাশি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সপ্তাহজুড়ে শীতের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে। এছাড়া অনেক স্থানে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও থাকবে। বৃষ্টির সাথে শীতের তীব্রতাও বাড়বে।’নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝোড়ো হওয়া বয়ে যেতে পারে।